English article: Supreme Court Demands Action After Shocking RG Kar Hospital Rape and Murder | Vaquill

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া এই ভয়ানক অপরাধের পর হস্তক্ষেপ করেছে। ৯ আগস্ট, ২০২৪এ, এক তরুণ আবাসিক ডাক্তার, যিনি ৩৬ ঘণ্টার শিফটে কাজ করছিলেন, নির্মমভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। এই ঘটনার পর দেশে ব্যাপক ক্ষোভ ও ন্যায়বিচারের দাবি উঠেছে।

ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে উদ্বেগ

তরুণ এই ডাক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় শুধু চিকিৎসক সমাজ নয়, গোটা দেশের মানুষ হতবাক। একইসঙ্গে এই ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার গুরুতর ত্রুটিগুলোও প্রকাশ করেছে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা ও মনোজ মিশ্রর সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ ঘটনার ওপর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আদালতে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল, মনিন্দর সিং, এএম সিংভি এবং বিজয় হানসরিয়া উপস্থিত ছিলেন, সাথে ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।

প্রধান বিচারপতি: সংবিধানে সমতার কথা বলা হয়েছে, তবে কর্মস্থলে যদি নারীরা নিরাপদ না থাকে, তাহলে এই সমতার মানে কী?

আদালত ডাক্তারদের নিরাপত্তার অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে নারী ডাক্তারদের ক্ষেত্রে, যারা দীর্ঘ সময় কাজ করেন, পর্যাপ্ত বিশ্রাম বা নিরাপত্তা ছাড়াই। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, এই ঘটনা শুধু একটি ভয়ানক হত্যাকাণ্ড নয়, বরং সারা দেশের ডাক্তারদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশের অভাবের প্রতিফলন।

ঘটনার তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত জানান, হাসপাতালের প্রিন্সিপাল শুরুতে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেছিলেন এবং এফআইআর দায়ের করতেও দেরি করেন, যা দেহ সৎকারের পর কয়েক ঘণ্টা পরে করা হয়। এছাড়াও, আদালত ভুক্তভোগীর ছবি ও তথ্য প্রকাশে অসন্তোষ প্রকাশ করেন, যা আইনি সুরক্ষার লঙ্ঘন।

ঘটনার পর বিশাল এক জনতা হাসপাতাল ভাঙচুর করে। সুপ্রিম কোর্ট জিজ্ঞাসা করেছে কেন কলকাতা পুলিশ ঘটনাস্থল রক্ষা করতে ব্যর্থ হল এবং বিশৃঙ্খলা সামাল দিতে পারল না।

advertisement

আদালতে মহিলা ডাক্তারদের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আইনজীবী জানান, আক্রমণকারীরা মহিলাদের হোস্টেলেও হানা দেয়, এবং মহিলা ডাক্তারদের হুমকি দেয়। এর ফলে অনেক ডাক্তার আতঙ্কিত হয়ে বাড়ি ফিরে যান। আইনজীবী আরও জানান, সেদিন পুলিশ তাদের দায়িত্ব ছেড়ে নার্সদের চেঞ্জিং রুমে লুকিয়ে পড়েছিল।

একজন সাহসী ডাক্তার, যার নাম গোপন রাখা হয়েছে, পুলিশকে এই ঘটনার কথা জানান এবং আদালতে সেই রিপোর্ট পেশ করা হয়। নিরাপত্তার জন্য আইনজীবী দুটি প্রস্তাব দেন: (১) একটি সফটওয়্যার ব্যবস্থা যা সাহায্যের জন্য সরাসরি নিকটস্থ থানার সাথে সংযোগ স্থাপন করবে, এবং (২) হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোর কার্যকরী অবস্থা নিশ্চিত করা।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষে আইনজীবী জানান, ভাঙচুরের ঘটনার পর ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৫০টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু সলিসিটর জেনারেল বলেন, “৫০টি এফআইআর? এটি তদন্তকে জটিল করবে!”

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা

আদালত ঘটনাটির একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেয় এবং কেসটির অগ্রগতির পাশাপাশি ভাঙচুরের ঘটনায় একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলে।

প্রবীণ আইনজীবী মনিন্দর সিং আইএমএ (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন)কে জাতীয় টাস্ক ফোর্সে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। প্রধান বিচারপতি একমত হন এবং বলেন, আইএমএ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে পরামর্শ করে প্রস্তাব পেশ করতে পারে।

সুপ্রিম কোর্ট একটি ১০ সদস্যের জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয়, যাতে থাকবেন:

  • সার্জন ভাইস অ্যাডমিরাল আরতি সারিন, এভিএসএম, ভিএসএম ডিরেক্টর জেনারেল মেডিক্যাল সার্ভিসেস (নেভি)
  • ডাঃ ডি নাগেশ্বর রেড্ডি চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর, এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি এবং এআইজি হাসপাতাল, হায়দ্রাবাদ
  • ডাঃ এম শ্রীনিবাস ডিরেক্টর, এইমস, দিল্লি
  • ডাঃ প্রতিমা মূর্তি ডিরেক্টর, নিমহান্স, ব্যাঙ্গালোর
  • ডাঃ গোবর্ধন দত্ত পুরি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, এইমস যোধপুর
  • ডাঃ সৌমিত্র রাওয়াত চেয়ারপারসন, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি, গঙ্গা রাম হাসপাতাল, দিল্লি
  • প্রফেসর অনিতা সাক্সেনা ভাইস চ্যান্সেলর, পন্ডিত ডিডি শর্মা মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি, রোহতক
  • ডাঃ পল্লবী সাপলে ডিন, গ্রান্ট মেডিক্যাল কলেজ মুম্বাই এবং স্যার জেজে গ্রুপ অব হাসপাতালস, মুম্বাই
  • ডাঃ পদ্মা শ্রীবাস্তব প্রাক্তন অধ্যাপক, নিউরোলজি বিভাগ, এইমস দিল্লি; বর্তমানে চেয়ারপারসন, নিউরোলজি, পারাস হেলথ।

অতিরিক্তভাবে, টাস্ক ফোর্সে থাকবেন এক্সঅফিসিও সদস্যরা:

advertisement

  • ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার থেকে মন্ত্রিসভা সচিব
  • কেন্দ্রীয় সরকার থেকে স্বরাষ্ট্র সচিব
  • স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব
  • ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের চেয়ারপারসন
  • ন্যাশনাল বোর্ড অব এক্সামিনেশনের সভাপতি

এই টাস্ক ফোর্সের উদ্দেশ্য হল চিকিৎসা পেশাদারদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা।

প্রধান বিচারপতি বলেন, "ডাক্তারদের নিরাপত্তা, বিশেষত নারী ডাক্তারদের নিরাপত্তা একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সমতার নীতি এর চেয়ে কম কিছু দাবি করে না। আরেকটি ধর্ষণ ঘটার আগে পদক্ষেপ নিতে হবে।"

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা

আদালত পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করেন। তারা অপরাধস্থল রক্ষা করতে এবং হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ সুযোগসুবিধা ভাঙচুর ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

মিডিয়ার ভূমিকা ও আদালতের উদ্বেগ

আদালত এই ঘটনাটি নিয়ে মিডিয়ার আচরণ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে। ভুক্তভোগীর পরিচয় ও ছবি প্রকাশ করার ফলে তার এবং তার পরিবারের মর্যাদার ক্ষতি হয়েছে বলে আদালত জানান।

advertisement

তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপের দাবি

সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে ২২ আগস্ট, ২০২৪এর মধ্যে একটি অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে। এছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেও ভাঙচুরের তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

চিকিৎসক সমাজের প্রতিক্রিয়া

এই মর্মান্তিক ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসকরা নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতার দাবি জানিয়ে ব্যাপক প্রতিবাদ করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি করার জন্য অনুরোধ করেছে।

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা

সুপ্রিম কোর্ট চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়ানোর জন্য গুরুতর পদক্ষেপ নিচ্ছে। একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করে এবং সিবিআই ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট দাবি করে আদালত দেখিয়েছে যে স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন এবং অধিক দায়িত্বশীলতা প্রয়োজন।

Reference:

Seersha Chaudhuri's profile

Written by Seersha Chaudhuri

Driven legal professional with a BA LLB and a knack for writing and media reporting. Previously, I’ve crafted legal documents and managed court proceedings at Terkiana PC, focusing on immigration law. I’m also brushing up on my Spanish with Duolingo—learning a new language has never been this fun! Eager to blend my expertise in legal research with my passion for global policy and creative writing. Apart from being a professional, I am a full time lover of fish, dystopian fiction and Brooklyn 99.

advertisement

আরও পড়ুন

advertisement

Join the Vaquill community to simplify legal knowledge